সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ , ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
হাসপাতাল চালুর দাবিতে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের অনির্দিষ্টকালের ক্লাস বর্জন বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ হাওরে চড়ক উৎসবে মানুষের ঢল ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা, দ্রুত পাকা ধান কাটার আহ্বান বন্যার ঝুঁকিতে হাওরাঞ্চল তিন দপ্তরের ছুটি বাতিল গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত বেড়ে ৫১ হাজার, নিখোঁজ ১১০০০ ধর্মপাশায় দুই আসামি গ্রেফতার বিএনপি’র ঈদ পুনর্মিলনী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে নববর্ষ উৎসব ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন মে মাসে এই সরকারকে ৫ বছর চাওয়ার কথা আমার নয়, জনগণের : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় পেছালো ১১৮ বার সুনামগঞ্জ শহরের শৃঙ্খলার জন্য অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা নববর্ষের প্রত্যাশা, বিজন সেন রায় বোরো ধান কাটার ধুম, হাওরে বৈশাখী হাসি আমাদের পহেলা বৈশাখ ছাতকসহ দেশের ১০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা বাতিল ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ
পাউবো’র দাবি বাঁধের কাজ ৮২ ভাগ শেষ, প্রত্যাখ্যান হাওর বাঁচাও আন্দোলনের

এবারও হাওরের মাটি কাটা হচ্ছে কলমে!

  • আপলোড সময় : ১৯-০২-২০২৫ ০৯:৩৬:১৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০২-২০২৫ ০৯:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন
এবারও হাওরের মাটি কাটা হচ্ছে কলমে!
বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে প্রবাদ আছে ‘হাওরের মাটি কলমে কাটে’। বরাবরের মতো এবারও হাওরে মাটি যেন কলমেই কাটছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাউবো’র দাবি- ইতোমধ্যে বাঁধের কাজ ৮২ ভাগ শেষ হয়েছে। তবে তাদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, এখনো বাঁধের কাজ অর্ধেক বাকি। তাদের অভিযোগ, খাতা কলমে অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরি করছে পাউবো। যা বাস্তবের সাথে মিল নেই। নীতিমালা অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বাঁধ নির্মাণ অসম্পূর্ণ থাকায় বোরো ফসলের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কায় জেলার শতাধিক হাওরের তিন লাখ কৃষক। কৃষকরা জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢল কিংবা অতিবৃষ্টিতে অকাল বন্যা দেখা দিলে নদ-নদী উপচে হাওরে পানি প্রবেশ করতে পারে। এতে অসময়েই ফসলডুবির আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। অবিলম্বে বাঁধের কাজ শতভাগ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, চলতি বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের ৫৩ হাওরে ১২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫৮৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করছে ৬৮৭টি পিআইসি। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত মোট বাঁধের ৮২ ভাগ শেষ করার দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। তবে সরেজমিনে জেলার দিরাই, শাল্লা, মধ্যনগর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধের কাজ পরিদর্শন করে পাউবো’র এমন দাবির সাথে মিল পাওয়া যায়নি। এখনো অনেক বাঁধে মাটি ফেলার কাজ বাকি। অসম্পূর্ণ রয়েছে ক্লোজার কিংবা ভাঙ্গার মাটি ভরাটের কাজ। বাঁধের কমপেকশন ও দুরমুজের কাজ হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে চাটাই ও বস্তা ফেলার কাজ বাকি। এখনো বাঁধে লাগানো হয়নি ঘাস। কৃষকরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা যাবে না। পুরোপুরি কাজ শেষ করতে আরও মাস খানেক সময় লাগতে পারে।
তাহিরপুর মাটিয়ান হাওরের কৃষক আব্দুর রব বলেন, মাটিয়ান হাওরে কিছুদিন হলো কাজ শুরু হয়েছে। এখনো বাঁধে মাটি ফেলা হচ্ছে। বাঁধে দুরমুজ হয়নি। বৃষ্টি আসলে মাটি ধুয়ে যাবে। কোনো বাঁধেই ঘাস লাগানো হয়নি।
শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের কৃষক পরিমল কান্তি বলেন, বাঁধের কাজ ঢিমেতালে হচ্ছে। যেভাবে কাজ হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে না। এতে ফসল ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীতে পানি আসলে হাওরে পানি প্রবেশ করবে। এদিকে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের দাবি জেলাব্যাপী বাঁধের কাজ ৫০ ভাগ হয়নি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংগঠনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বিগত সময়ের মতো এবারও খাতা-কলমে বাঁধের কাজ করছেন। তারা মুখে বলছেন কাজ শেষ আর বাস্তবে অর্ধেকও হয়নি। বাঁধে মাটি ফেললেই কাজ শেষ হয় না। বাঁধ টেকসই না করতে পারলে পানির প্রথম ধাক্কায় বাঁধ ভেঙে হাওরডুবি হবে। সরকার এতো বরাদ্দ দেয়ার পরও বাঁধ ভেঙে হাওরডুবির ঘটনা ঘটলে এর দায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নিতে হবে।

নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ইতোমধ্যেই ৮২ ভাগ কাজ শেষ। আশা করছি বাকি ১০ দিনে শতভাগ সম্পন্ন করা যাবে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এবার বাঁধের কাজ ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স